Development Worker

test

All Posts

Post Top Ad

Your Ad Spot

শনিবার, ২৯ মে, ২০২১

ক্ষমতায়ন ও নারী ক্ষমতায়ন


ক্ষমতায়নের ধারণা

১৯৮০- দশকের মাঝামাঝি থেকে ক্ষমতায়ন (Empowerment) শব্দটি একটি জনপ্রিয় পরিভাষা হয়ে ওঠে। শব্দটি কল্যাণ,  উন্নয়ন,  অংশগ্রহণ, দারিদ্র্য বিমোচনের মতো শব্দগুলোর পর্যায়ভুক্ত হয়। ক্ষমতায়ন উন্নয়নের একটি গুরুত্ব¡পূর্ণ উপাদান, একটি প্রক্রিয়া। বিশেষত সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাস্তবায়নে অংশগ্রহণ এবং প্রভাবিত করার অধিকার, সক্ষমতা সুযোগ অর্জনের ক্ষমতা হল ক্ষমতায়ন।

ক্ষমতায়ন হলো এমন এক দক্ষতা যার দ্বারা ব্যক্তি নিজের সম্পদের যথার্থ ব্যবহার করে জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে, সিদ্ধান্ত গ্রহণ বাস্তবায়নে সক্ষম হয়। ক্ষমতায়ন বিদ্যমান ক্ষমতার সম্পর্ক জেন্ডার বৈষম্যকে চ্যালেঞ্জ করে।

বিভিন্ন জন বিভিন্নভাবে ক্ষমতায়নকে সংজ্ঞায়িত করেছেন। ম্যাকহুইরটারের সংজ্ঞাটি অধিকতর প্রাসঙ্গিক বলে এখানে উদ্ধৃত করা হল:

 

ক্ষমতায়ন হল এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে-

. ক্ষমতাহীন জনগণ, সংগঠন অথবা দল নিজেদের জীবনের প্রেক্ষাপটে ক্ষমতার কার্যকারিতা সম্পর্কে সচেতন হয়;

. নিজেদের জীবনের উপর যথেষ্ট পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার জন্য দক্ষতা সক্ষমতা অর্জন করে;

. অন্যের অধিকারকে খর্ব না করে এই ক্ষমতা ব্যবহার করে; 

. সমাজের অন্যদেরকেও ক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে।

 

ক্ষমতায়ন বলতে বোঝায় -

§ বস্তুগত সম্পদ। যার মধ্যে রয়েছে:

-  স্থাবর সম্পদ- জমি,  জলাশয় বনভূমি,  ইত্যাদি।

-  মানব সম্পদ- মানুষ,  মানুষের দক্ষতা,  শ্রম,  ইত্যাদি।

-  আর্থিক সম্পদ-  পণ্য,  ব্যবসা,  উৎপাদন,  অর্থ ইত্যাদি।

§ বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদ- জ্ঞান,  তথ্য এবং ধারণা,  ইত্যাদি।

§ আদর্শিক সম্পদ- একটি নির্দিষ্ট আর্থ-সামাজিক পরিবেশে মানুষ যে উপলব্ধি করে এবং সক্রিয় হয়।

 

এই তিন ধরনের সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠাই হল ক্ষমতায়ন। ক্ষমতায়ন সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অর্পণ করে। ক্ষমতায়ন তাই একই সঙ্গে একটি প্রক্রিয়া সেই প্রক্রিয়ার ফল।

এখানে উল্লেখ্য,  ক্ষমতায়ন এবং আত্মনির্ভরশীলতা বা স্বনির্ভরতা (Self Reliance) প্রায়শ: একই অর্থে ব্যবহৃত হলেও এদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। আত্মনির্ভরশীলতার অর্থ বিরাজমান সামাজিক কাঠামোর মধ্যে নিজস্ব উদ্যোগে তাদের নিজেদের উন্নয়ন সাধনে মানুষের সক্ষমতা অর্জন। এখানে ধরে নেয়া হয় যে সমাজে কাঠামোগত অসমতা বা  বৈষম্য নয়, মানুষের বর্তমান সক্ষমতা বা প্রচেষ্টার ঘাটতি থেকেই অনুন্নয়ন সমস্যা উদ্ভূত হয়। কিন্তুক্ষমতায়ন হল ব্যক্তিগত এবং সামাজিক উভয় পরিকল্পনার ক্ষেত্রেই ক্ষমতা অর্জন করা। তাই বিদ্যমান ক্ষমতা-সম্পর্ককে প্রশ্নের সম্মুখীন করা এবং ক্ষমতা উৎসের উপর অধিকার নিয়ন্ত্রণ অর্জনের প্রক্রিয়াকে সাধারণত ক্ষমতায়ন বলে আখ্যায়িত করা হয়।


ক্ষমতায়নের উৎস নির্দেশক:

মানুষ সাধারণত: যে সকল ক্ষমতা ব্যবহার করে তার মূল ভিত্তি হলো সম্পদ। এই সম্পদ হতে পারে-

আর্থিক সম্পদ- পণ্য, ব্যবসা, উৎপাদন, অর্থ, পুঁজি,  মজুরি, ঋণ  ইত্যাদি।

মানব সম্পদ- মানুষ, শারীরিক সক্ষমতা, জ্ঞান, মানুষের দক্ষতা, শ্রম, সৃজনশীলতা ইত্যাদি।

প্রাকৃতিক সম্পদ- জমি, জলাশয় বনভূমি, যোগাযোগ ব্যবস্থা ইত্যাদি।

সামাজিক সম্পদ-  রীতিনীতি, সংস্কৃতি, মূল্যবোধ, নৈতিকতা, সামাজিক সম্পর্ক ইত্যাদি।

এছাড়াও তথ্য-প্রযুক্তিও একটি বড় সম্পদ যা উল্লিখিত ৪টি সম্পদের সাথেই ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত। যা একজন মানুষের ক্ষমতার উৎস এবং যার মাধ্যমে মানুষ নিজের জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, মতামতের প্রকাশ সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

 

ক্ষমতায়নের ধরণ:

আত্নউপলব্ধিগত ক্ষমতায়নমানুষ যখন তাদের অধঃস্তন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়;

মানসিক ক্ষমতায়ন - আত্মশক্তি,  আত্মবিশ্বাস এবং মর্যাদা থাকা;

অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন - উপার্জনে সক্ষম এবং সম্পত্তিতে নিয়ন্ত্রণ থাকা;

রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন - একজন ব্যক্তির প্রতিটি বিষয় বিশে¬ষণ করে পরিবর্তনে ব্রত হওয়া;

 

ক্ষমতার ভিন্ন ভিন্ন রুপ:

§  কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা (Power-over): কর্তৃত্ব বা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তি অন্যকে ইচ্ছে অনুযায়ী ব্যবহার করে, নিজ ইচ্ছা পূরণে অন্যকে সম্মত করে। ক্ষমতা অন্যের অধিকারকে হরণ করে। তাই এই ক্ষমতা প্রত্যক্ষ পরোক্ষ বিরোধিতা/বাধার সম্মূখীন হয়। ক্ষমতা বলতে মানুষ সাধারণত: এই কর্তৃত্ব করার ক্ষমতাকে বুঝে থাকে বলে নারীর ক্ষমতায়নের ব্যাপারে নির্যাতিত হবার অমূলক ভয় কাজ করে।

§  নিজস্ব সক্ষমতা (Power-to): অন্যের অধিকারকে খর্ব না করে, অন্যকে নিয়ন্ত্রণ না করে একজন ব্যক্তির নিজস্ব ক্ষমতার বিকাশ। এই ক্ষমতা হলো উৎপাদনমূখী সৃজনশীল ক্ষমতা; যা একজন ব্যক্তির সুপ্ত প্রতিভা বা সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে ব্যক্তির জ্ঞান দক্ষতা বাড়ায়। এই ক্ষমতার উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা, সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, কারিগরি দক্ষতা ইত্যাদি।

§  সামষ্টিক বা যৌথ ক্ষমতা (Power-with): সামষ্টিক বা যৌথভাবে কোন সমস্যা সমাধান করা, সাংগঠনিকভাবে কোন উদ্যোগ নেওয়া, যৌথ কার্যক্রম পরিচালনা করা, যৌথ নেতৃত্ব প্রদান ইত্যাদি কাজের মাধ্যমে যখন নিজেদের ক্ষমতাশালী মনে করেন। কিছু সংখ্যক ব্যক্তি ক্ষমতাশালী না হয়ে দলের/সংগঠনের প্রত্যেকে ক্ষমতাশালী হওয়া বেশী কল্যাণকরÑ এই মনোভাব এই ধরণের ক্ষমতার উৎস।

§  আত্মশক্তি বা ক্ষমতা (Power-from within): আত্মশক্তি স্বকীয়তা যা আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই আছে। এইআত্মশক্তি আমাদের সত্যিকারের মানুষ হিসাবে গড়ে তোলে। এই ক্ষমতার ভিত্তি হলো নিজের আয়নায় নিজেকে দেখা, নিজের দোষ গুণকে জানা এবং গ্রহণ করা। নিজ সম্পর্কে সঠিক ধারণার ফলে অন্যদের দোষ -গুণকেও গ্রহণ করা, তাদেরকে নিজের সমান ভেবে শ্রদ্ধা করা। এই ক্ষমতা নিজকে জানা এবং অন্যকে শ্রদ্ধা করার উপর গুরুত্ব আরোপ করে। একজন ব্যক্তিকে আংশিকভাবে না দেখে পূর্নাঙ্গভাবে বিবেচনা করার কথা বলে।

§

নারীর ক্ষমতায়নের ধারণা

নারীর ক্ষমতায়নকে তিনটি সুনির্দিষ্ট প্রেক্ষাপটের আলোকে বিশ্লে¬ষণ করা যেতে পারে,  যেমন -

ক্ষমতায়ন হলো নিজের জীবনের পছন্দ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার অধিকার;

ক্ষমতায়ন হলো নারী জীবনে প্রভাব বিস্তারকারী পারিপার্শ্বিকতার ওপর নিয়ন্ত্রণ  আরোপ এবং

ক্ষমতায়ন হলো নারীর দক্ষতা যা দিয়ে তারা নিজের জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনে এবং বিদ্যমান জেন্ডার  বৈষম্যকে চ্যালেঞ্জ করে;

সুতরাং নারীর ক্ষমতায়ন হলো একটা বিবর্তন প্রাক্রিয়া যা নারীকে তাবৎ ক্ষমতাকে চিহ্নিত করতে সক্ষম করে, দক্ষতার মাধ্যমে নিজেদের জীবনের ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সহায়তা করে, নিজের জীবনের পছন্দ-অপছন্দ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং প্রভাব বিস্তারকারী পারিপার্শ্বিক অবস্থার প্রতি নিয়ন্ত্রণ আরোপ করতে উৎসাহিত করে।

 

নারীর ক্ষমতায়নের সংজ্ঞা:

জাতিসংঘের মতে, নারীর ক্ষমতায়ন হলো এমন এক প্রক্রিয়া যা নারীর সম্পত্তিতে সমান প্রবেশাধিকার এবং সম (নারী-পুরুষ) কল্যাণের লক্ষ্যে জেন্ডার বৈষম্য বুঝতে, চিহ্নিত করতে এবং দূর করতে সহায়তা করে।


শ্রীলতা বাতলিওয়ালা (১৯৯৪) মতে, “নারীর ক্ষমতায়ন হচ্ছে ক্ষমতার উৎসের ওপর অধিকতর নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং বিদ্যমান ক্ষমতার সম্পর্ককে চ্যালেঞ্জ করার একটা প্রক্রিয়া


নায়লা কবিরের (১৯৯৪) মতে, “নারীর ক্ষমতায়ন, আত্ম-উপলব্ধি থেকে উদ্ভুত যা নারীকে উৎসাহ দেয়, স্বীকৃতি দেয় এবং পরিবারে সমাজে জেন্ডার বৈষম্য চ্যালেঞ্জ করে


কমলা ভাসিনের (১৯৯৫) মতে, “নারীর ক্ষমতায়নের অর্থ পুরুষের উপর কর্তৃত্ব করা নয়, আমাদের যা প্রাপ্য তার চেয়ে বেশি নিয়ন্ত্রণ করা নয়; এটা হলো নিজস্ব সক্ষমতা, নিজের লোভ, লালসা, আগ্রাসন দমন করার ক্ষমতা; অন্যের প্রতি প্রতিপালন, সংশোধন, এবং যত্নবান হওয়া; এটা হলো ন্যায়-নীতি এবং নৈতিকতার সংগ্রাম; এটা হলো আত্নউন্নয়ন যা জ্ঞান সহানুভূুতি জাগ্রত করে। নারীর ক্ষমতায়ন কোন একপাক্ষিক প্রক্রিয়া নয়- যেখানে কিছু কর্মী পৌঁছে অন্যকে ক্ষমতায়িত করে। এটা হলো দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়া যেখানে আমাদের ক্ষমতায়ন হয় এবং অন্যকে ক্ষমতায়িত করি। এটা আমাদের সকলের জন্য চলমান প্রক্রিয়া। এককভাবে চিরদিনের জন্য কেউ ক্ষমতাবান হতে পারে না এবং অন্যকেও ক্ষমতায়িত করার দক্ষতা অর্জন করতে পারে না।


অতএব, নারীর ক্ষমতায়ন কী প্রশ্ন আসলে বলা যায় যে,এক কথায়, নারীর ক্ষমতায়ন হলো নারীর সক্ষমতার বিকাশ ঘটানো যেন নারী নিজ জীবনের উপর নিয়ন্ত্রণ অধিকার অর্জন করে পছন্দ মাফিক জীবন বেছে নিতে পারে, বস্তুগত অবস্তুগত সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে নিজের অবস্থা অবস্থানের উন্নয়ন করার পাশাপাশি অন্যের উন্নয়নে ভূমিকা পালন করতে পারে।   

        

নারীর ক্ষমতায়ন কাঠামো:

নিম্নউক্ত টি উপায়ে নারীর ক্ষমতায়ন অর্জিত হয়। যেমন - 

.            কল্যাণ - নারীর মৌলিক চাহিদার প্রতি দৃষ্টি দিয়ে;

.           প্রবেশাধিকার - সম্পদ,  শিক্ষা এবং রাজনীতিতে প্রবেশাধিকার দিয়ে;

.           নারী জাগরণ - নারীর বিদ্যমান অবস্থা সম্পর্কে তাদের সচেতন করে;

.           অংশগ্রহণ - নারী জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে (অর্থনৈতিক,  সামাজিক,  রাজনৈতিক,  সাংস্কৃতিক) অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিয়ে এবং

.           নিয়ন্ত্রণ - নারী-পুরুষের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের ভারসাম্য বজায় রেখে।

 

নারীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া:

§  সংগঠিত নারীদের সচেতন করে;

§  নারীর অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টি করে;

§  নারীদের জন্য উন্নয়ন কর্মসূচী হাতে নিয়ে;

§  নারীকে এ্যাডভোকেসি, গবেষণা এবং সহযোগী সেবা দিয়ে।

 

নারীর ক্ষমতায়নের প্রয়োজনীয়তা:

সমাজে সমতা আনয়নের জন্য নারীর ক্ষমতায়নের কোন বিকল্প নেই। যদি নারীরা অসুখী হয় তবে বাড়িতে, সমাজে এবং জাতীয় জীবনে উন্নয়ন অসম্ভব। ম্বাধীনতা যুদ্ধে যেমন নারীরা পুরুষের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যুদ্ধ করেছে ঠিক তেমনি, উন্নয়নের ধারা তখনই সচল হবে যখন নারীরা সামাজিক অর্থনৈতিকভাবে স্বাধীন হবে।

 

নারীর ক্ষমতায়ন কেন জরুরী?

§ নারীর ক্ষমতায়ন পিতৃতান্ত্রিক মতাদর্শকে চ্যালেঞ্জ করে নিরপেক্ষ সমাজ প্রতিষ্ঠায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে

§ নারীর অধিকার অর্জনে ক্ষমতায়ন জরুরী

§ নারী-পুরুষের মধ্যে অসমতা সৃষ্টিকারী কাঠামো এবং প্রতিষ্ঠানের বিলোপ সাধনের জন্য

§ তথ্যে তত্তে¡ নারীর অধিকার এবং তা বাস্তব জীবনে প্রয়োগে নারীর ক্ষমতায়ন আবশ্যক

§ দ্রুত আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নারীর ক্ষমতায়নের কোন বিকল্প নাই

§ নারীর ক্ষমতায়ন গোটা পরিবার সমাজকে ক্ষমতায়িত করতে সাহায্য করে

 

তথ্যসূত্র:

.         Kamla Bhasin, The Goal in Empowerment of Human Values,  International Conference on Women’s Empowerment and Education,  New Delhi,  1995.

.           Srilatha Batliwala, Women’s Empowerment in South Asia,  FAO-1994.

.       Arun Kumar Goswami, Empowerment of Women in Bangladesh, Empowerment,  1998,  vol-5.

.      Srilatha Batliwala, The Meaning of Women’s Empowerment: New Concepts from Action,  New York 1994.

.           নাজমা সিদ্দিকী,  বিশ্বায়নের প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়ন,  বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটি পত্রিকা,  বিংশ খন্ড,  দ্বিতীয় সংখ্যা,  ডিসেম্বর ২০০২।

.           নারীর ক্ষমতায়ন,  রাজনীতি আন্দোলন,  সেলিনা হোসেন (সম্পা:),  ২০০৩।

 

নারীর ক্ষমতায়নের কৌশল:

এখানে বলে রাখা ভালো যে, নারী ক্ষমতায়নের কোন ফর্মূলা নেই, দক্ষিণ এশিয়ায় ক্ষমতায়নের কৌশল উন্নয়ন কাজের ভিতর সংশ্লিষ্ট।

.            শহর নগরের ভৌগলিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে দরিদ্রতম নারীদের সাথে কাজ করা।

.           নারীদের আত্ম-উপলব্ধি এবং অভিজ্ঞতাকে গুরুত্ব দেওয়া।


নারীর ক্ষমতায়নের উপায়:

§  লেখাপড়া শেখার পাশাপাশি দক্ষতা বৃদ্ধি যেমন- হিসাবনিকাশ করা, পণ্য বহুমূখিকরণ, লাভজনক জীবিকা সহায়ক উদ্যোগসমূহ যাচাই করা, আস্থা তৈরি, যে পণ্যের ব্যবসা করা হবে সে সম্পর্কে দক্ষতা লাভ, প্রয়োজনীয় নিয়মকানুন সম্পর্কে জানা এবং ব্যবস্থাপনার দক্ষতা অর্জন ইত্যাদি।

§  সুস্বাস্থ্য নির্যাতনমুক্ত জীবন

§  চলাফেরার স্বাধীনতা

§  বাড়ীর বাইরে কাজ আয়

§  সম্পদের উপর অধিকার নিয়ন্ত্রণ

§  ব্যবসা পরিচালনার জন্য যে অর্থ প্রয়োজন তার জন্য ব্যাংক কিংবা অন্য এনজিওর সাথে যোগাযোগ করা

§  ব্যবসার জন্য কাঁচামাল সংগ্রহ করা

§  হাটবাজারে যাওয়া-আসা এবং ব্যবসায়ীদের সংগে যোগাযোগ রক্ষা

§  সকল প্রতিষ্ঠানে নারীর অংশগ্রহণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ

§  গৃহস্থালী কাজে পুরুষের অংশগ্রহণ

§  নারীর ক্ষমতায়নে সংগঠন জোট গঠন

§  কন্যা সন্তানের বিকাশে সহায়তা

§  নারীর আত্মমর্যাদা আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি

 

নারীর ক্ষমতায়নের সুফল:

§  নারী নিজে পরিবারের সকল সদস্য, সমাজ গোটা জাতি উপকৃত হবে

§  সমাজে নারীর মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে

§  নারীর ক্ষমতায়নের ফলে পুরুষেরা গৃহকাজ এবং শিশু লালনপালনে অংশ নেবে, ফলে নারী-পুরুষের সম্মিলিত চেষ্টায় গৃহ আরো সমৃদ্ধ সুন্দর হয়ে উঠবে। পিতা-মাতা উভয়ের ঘনিষ্ঠ সাহচার্য পেলে সন্তানদের বিকাশ ত্বরান্বিত হবে

§  ঘরের বাইরে কঠিন সংগ্রামের কাজসমূহ নারীর সংগে অংশগ্রহণের ভিত্তিতে করতে পারবে, ফলে এককভাবে তা করার দায়িত্ব থেকে পুরুষ মুক্তি পাবে

§  পারিবারিক জীবন নির্যাতনমুক্ত হবে, ফলে পুরুষরা আর নির্যাতক থাকবে না। নারী-পুরুষের মধ্যে পারস্পারিক শ্রদ্ধাবোধ বৃদ্ধি পাবে

§  শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, চলাফেরা, নেতৃত্ব প্রদান, সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে এবং পারিবারিক, সামাজিক জাতীয় জীবনে উভয়ে সমভাবে সম্মিলিত অবদান রাখতে পারবে

§  রাজনীতি সমাজে কম দূর্নীতি হবে। সমাজ পরিবারে শান্তি, ন্যায়বিচার স্থিতি বাড়বে

§  সমাজে পরিবারে সম্পদেও যথাযথ ব্যবহার হবে এবং পরিবারের খাদ্য নিরাপত্তা বাড়বে

§  পরিবারে উভয়ে সুখদু: সমানভাবে ভাগাভাগি করতে সমবেদনাকে উপলব্ধি করতে শিখবে

§  পুরুষের পাশাপাশি নারীসমাজ রাষ্ট্রীয় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুণগত অবদান রাখবে

§  পুরুষের ভূমিকার মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে যা নারী-পুরুষ দুজনের মধ্যে মানবিক গুণাবলী চর্চা বৃদ্ধি পাবে।

Post Top Ad

Your Ad Spot

Pages