ঈদ মানেই খুশি! ঈদ মানেই আনন্দ! দেশের সর্বস্তরের মানুষ যখন ঈদের আনন্দ উপভোগ করার জন্য যার যার সামর্থ অনুযায়ী আয়োজনে ব্যস্ত হয়ে ওঠেন, ঠিক সেই সময়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনে ব্যাস্ত হয়ে ওঠেন। ব্রান্ডের দোকান গুলোর মূল্যের স্টিকার পরিবর্তন হয়ে যায় আর ননব্রান্ডের দোকানদাররা দাম হাকেন দ্বিগুণ বা তিনগুণ ।
উচ্চবৃ্ত্তের
মানুষেরা এনিয়ে তেমন মাথা ঘামান না কিংবা তাদের
মাথা ঘামাবার মতো যথেষ্টো কারণও নেই। সমস্ত চাপটা গিয়ে পড়ে নিম্নবৃত্ত, নিম্নমধ্যবৃত্ত বা মধ্যবৃত্তের উপরে। এ শ্রেণীর মানুষেরা বাজারে
গিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কাছে, অগত্যা নিজের প্রাণপ্রিয় সন্তানকে
তার পছন্দের পোশাকটি কিনে দিতে না পেরে, মূল্যবোধের পাঠপড়িয়ে নিজের পছন্দমত কমমূল্যের
পোশাক দিয়েই বাধ্য করতে হয় ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে।
এই
পরিস্থিতি আসলে একদিনের নয়, এটি চলমান রয়েছে দীর্ঘদিন থেকে। ঈদ কিংবা যেকোন উৎসবের
পূর্বই বাজার ব্যবস্থার অস্বাভাবিক পরিবর্তন যেমন লক্ষ্য করা যায়, তেমনি ব্যবসায়ীদের
আচরণেরও আমুল পরিবর্তন প্রতিয়মান হয়ে ওঠে ( নিলে নেন, না নিলে রাস্তা মাপেন, একবার
নিলে সেটি আর পরিবর্তন করা যাবেনা ইত্যাদি শ্রেণীর) যা সহ্য করা ছাড়া একজন সাধারণ ক্রেতার আর কিছুই করার
থাকে না। একজন সাধারণ ক্রেতা সমস্তকিছু সহ্য করে নিয়ে কেবলই বেলতে থাকেন ‘দেখার কেউ
নাইরে ভাই , দেখার কেউ নাই’।
হ্যা,
দেখার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে নিয়োজিত সংস্থার নাম জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
যার ইদানিং কালের অতিরিক্ত মূল্যবৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে পরিচালিত অভিযানের চিত্র আমাদের
সকলের কাছে প্রতিয়মান। অনিয়ম প্রমাণীত হলে সতর্ক করে নামমাত্র জরিমনা এবং ভোক্তা অধিকারের
প্রস্থান পরবর্তি চিত্র একই রকম। তাছাড়া প্রতিষ্ঠনটির জনবল শূন্যতা ও আইনি কঠামোর দুর্বলতা
–তো রয়েছেই ।
উপরের
চিত্রটি মূলত তথ্য অধিকার আইন-২০০৯ এর আওতায় আমার করা আবেদনের উত্তর, যেখানে দেখা যাচ্ছে
রাজশাহীর কাপড় পট্টিতে চলতি অর্থবছরে মাত্র
একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছে এবং জরিমনা আদায় হয়েছে মাত্র ৫০০০/-(পাঁচ হাজার টাকা মাত্র)
যা মোটেও পর্যাপ্ত নয়। এখানকার ব্যবসায়ীদের মধ্যে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত মুনাফা
অর্জন , ক্রেতাদের সাথে অসদআচরণসহ বিভিন্ন পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত প্রতিয়মান হয়ে থাকে।
বিশেষ করে যা প্রতি বছর ঈদের আগে চরমে গিয়ে পৌছায়।
এমতাবস্থায়,
কেবলমাত্র সংশ্লিষ্ঠ সকল সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সম্মেলিত উদ্যোগই পারে একজন
সাধারণ ভোক্তর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন